কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের এক মাত্র খেলার মাঠ উন্নয়নের কোন পদক্ষেপ না থাকলেও জজরাজীর্ণ এ মাঠ দখলে মনোযোগী হয়েছেন কতিপয় ব্যক্তিরা….!
সে দিকে কলেজ প্রশাসনের নজর আছে কি…???
কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ মাঠ এখন ইতিহাস। শুধু কুষ্টিয়া নই, দক্ষিন বঙ্গের ঐতিহ্যবাহী ও বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। যা কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ নামে ব্যাপক পরিচিত অনেক আগে থেকেই।
এখানে প্রায় ২৬ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর বিচরণ। এই কলেজে শিক্ষা নিয়ে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন নামি দামী প্রতিষ্ঠানের কর্তা পর্যায়ের দায়িত্বে আছেন অনেকেই। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর স্বপ্ন খেলা করে। বৃহত্তর কুষ্টিয়া ছাড়াও যশোর বোর্ডের ভালো ফলাফলের পাশাপাশি খেলাধুলায়ও অনেক এগিয়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে খেলা করে বাংলাদেশ তথা বিশ্বের বুকে বিশিষ্ট ক্রিকেটার হিসাবে পরিচিত লাভ করেছেন হাবিবুল বাশার সুমন। যে মাঠের ছোয়া নিয়ে দেশের জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলছেন এনামুল হক বিজয়। যে খেলার মাঠে পদধূলি দিয়েছেন দেশের বহু নামিদামী খেলোয়াড়। যে মাঠের খেলা দেখে প্রতিদিন সময় পার করতো কুষ্টিয়ার ছোট-বড় তথা বৃদ্ধ বয়সী মানুষ। এই কলেজের মাঠটি অত্র অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রানপ্রিয়। সেই ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠ এখন দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। খেলার মাঠ কর্তৃপক্ষের অসচেতনতা ও অবহেলার কারনে বিলুপ্তপ্রায়। কিন্তু বর্তমানে কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও অসচেতনতার কারনেই প্রতিষ্ঠানের একমাত্র খেলার মাঠটি দীর্ঘদিন বৃষ্টির পানি ও কচুরীপানায় শোভায়িত। শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মুলমন্ত্র।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের একমাত্র খেলার মাঠটি পানি ও কচুরীপানায় ভরা। সেখানে এখন আর কোন খেলা হয় না। শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীরা খেলার মাঠের কচুরীপানা ও পানি ভর্তি দেখেই ক্ষান্ত থাকেন, আর বিমর্ষ নয়নে দির্ঘশ্বাস ছাড়েন। সেখানে এখন শুরু হয়েছে দখলদারিত্ব। নির্মাণ করা হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
বেশ কিছু বছর হয়ে গেল এই মাঠটির কোনরূপ সংস্কার না করার কারনে আজ ডোবায় পরিনত হয়েছে। আর এই সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দখল করে শুরু মার্কেট নির্মাণ করা। কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন মাঠ সংস্কার না করার কারনে এই বেহাল অবস্থা, মাঠের চারপাশে অপরিকল্পিত বাসভবন এবং পানি নিস্কাশনের প্রয়োজনীয় ড্রেন না থাকার কারনে আজ এই অবস্থা। এখানে একটি গ্রুপ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা করছে।কুষ্টিয়ার ক্রীড়াবিদ পলাশ মৃধা এ বিষয়ে বলেন, কুষ্টিয়ার সরকারী কলেজের খেলার মাঠটি দীর্ঘদিন যাবৎ কর্তৃকপক্ষের উদাসীনতায় খেলার জন্য সম্পূর্ন অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব উদাসীনতা ভুলে খেলার মাঠটি সংস্কারের মাধ্যমে খেলা-ধুলার উপযোগী করে তোলা।মাঠটির ব্যাপারে কিছু সুত্র জানায়, বেশকিছু কয়েক বছর আগে সাবেক অধ্যক্ষ বদরুদ্দোজার সময় নামমাত্র মাঠটি সংস্কার করা হলেও তাতে কোন ফল আসেনি। এছাড়াও একাধিকবার খেলার মাঠ সংস্কারের জন্য একাধিকবার বাজেট প্রদান করা হলেও সংস্কার করা হয়নি। এদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের মাঠটি খেলার অনুপযোগী থাকার কারনে কলেজে কোন ধরনের খেলাধূলা হয় না।
অপরদিকে কলেজের ভিতরে গিয়ে দেখা যায় একাডেমিক ভবনের সামনের ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচাল ও বসার জন্য যে জায়গা রয়েছে তা নোংরা ও জঙ্গলে ভরা। বৃহত্তর কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী কলেজের পরিবেশ দেখে বোঝার অবকাশ নেই যে বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।তাই ছাত্র ছাত্রীদের দাবী যত দ্রুত সম্ভব কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের মাঠসহ কলেজের মানসম্মত পরিবেশ সৃষ্টিতে কর্তৃপক্ষ দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।এদিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি স্বপন নিজ উদ্যোগে মাঠ সংস্কারের চেষ্টা করে। বারবার কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে আশ্বাস দিয়ে এখনো পর্যন্ত কলেজের একমাত্র খেলার মাঠ সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।বর্তমানে এই মাঠটির বিষয়ে অনেকেরই প্রশ্ন এই খেলার মাঠ নষ্ট হওয়ার মুল কারন কি? তারা কি পাবে ফিরে তাদের এই প্রানপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী মাঠটিকে, নাকি বেদখলি হয়ে যাবে ? প্রস্নটি এখন কর্তৃপক্ষের কছেই রইল।