দেশের অন্যতম লিচু উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত ঈশ্বরদী। তবে করোনা সংকটের কারণে উপজেলার লিচুচাষিরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আর হয়তো এক সপ্তাহ পর বাজারে আসার কথা লিচুর। কিন্তু পাইকার ও ক্রেতা নেই বাগান এলাকায়।
ফলে এ উপজেলায় উৎপাদিত প্রায় ৫০০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি অনেকটাই অনিশ্চিত রয়েছে।
সাহাপুরের লিচুচাষি আলাউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, পাঁচ বিঘায় লিচু বাগান আছে আমার। ফলনও এবার ভালো হয়েছে। কিন্তু ঢাকার কোনো পাইকার এখনও আসছে না। এই আয় থেকে পারিবারিক অনেক কাজ করি। এ অবস্থা বহাল থাকলে সেসব পরিকল্পনাও এবার বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া, সলিমপুর, সাহাপুর, লক্ষীকুণ্ডা, পাকশীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে বাগানগুলো চাষিরা প্রয়োজনীয় পরিচর্যা শেষ করে এখন বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছেন। আর এক সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ বাগানের লিচু পরিপক্বভাবে পেকে উঠবে।
লিচুচাষি আজগর মল্লিক বলেন, এই ফল স্বল্পসময় রাখা যায়। ১৫-২০ দিনের মধ্যে লিচু গাছ থেকে নামাতে হয়। কিন্তু এবার করোনা সংকটে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলার পাইকাররা ঈশ্বরদীতে এখনও আসেননি। অন্যবার এর আগেই সবাই যোগাযোগ করতেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুল লতিফ বলেন, আমরা আশা করছি দুয়েক দিনের মধ্যে এটির সমাধান হবে।
এদিকে গত শনিবার দুপুরে চলমান করোনা সংকটে ঈশ্বরদীসহ পাবনা জেলায় উৎপাদিত লিচু ও আম কীভাবে বাজারজাত করা যায় তা নিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের সঙ্গে কৃষি বিভাগের জেলা কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেছেন।
এই সভায় পাবনা জেলার সব কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এই সভায় উপস্থিত ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আবদুল লতিফের কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবার এ উপজেলায় তিন হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। এ থেকে ফল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে ৩৪ হাজার টন। এই পরিমাণ লিচুর বাজারমূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
কয়েক দিনের মধ্যে গাছ থেকে লিচু নামানো শুরু হবে। এই পরিস্থিতিতে লিচু বিক্রির ব্যবস্থা করতে না পারলে চাষিরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।