কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের হরিণগাছি গ্রামের শামীম হত্যা মামলার পরবর্তিতে আসামী পক্ষের লোকজনের বাড়িঘর লুটপাট ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে গেলে দেখা যায় গ্রামের একটি মহল্লায় প্রায় ৬০ টা পরিবার গ্রাম ছাড়া হয়েছে।জনশূন্য ভুতুড়ে অবস্থা মহল্লাটির।
সাংবাদিকদের উপস্থিতি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশের এলাকা থেকে বেশকিছু মহিলা চলে আসে ঘটনাস্থলে। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেক ভয়-ভীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। তারা সাংবাদিকদের জানান, এসব বাড়িঘর আমাদের।
শামিম হত্যা হওয়ার পর থেকে আমরা বাড়িঘরে আর আসতে পারি নাই । যদিও কখনো আমরা চুরি করে বাড়িঘরে আসি সাথে সাথে আমাদের উপর আক্রমণ করার জন্য তারা চলে আসে। তারা আরো জানান, হত্যা পরবর্তী সময়, স্বাধীন,ফারুক আলম পান্না ও দিনু মেম্বারের নেতৃত্বে আমাদের বাড়িঘরের সমস্ত কিছু লুটপাট করে নেওয়া হয়েছে এবং ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের সাথে কথোপকথনের সময় হঠাৎ করে বাদী পক্ষের লোকজন চলে আসে এমত সময় উপস্থিত মহিলারা প্রচন্ড ভয় পেতে থাকে আসামী পক্ষের লোকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার চেষ্টা করলে বাদী পক্ষের লোকজনই নিয়ন্ত্রণ করেন । আসামি পক্ষের লোকজনের দেওয়া তথ্যমতে বাদী পক্ষের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তারা । এ বিষয়ে স্বাধীন জানান, আসামী পক্ষের লোকজন আমি এবং ফারুক আলম পান্না, দিনু মেম্বার সম্পর্কে যে ধরনের অভিযোগ উপস্থাপন করেছে ,সেটা ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। আমাদের কোন লোকজন তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত নন। বরং তাদের মালামাল তারা নিজেরাই সরিয়ে নিয়ে গেছে এরকম অনেক প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। কিন্তু কিছু প্রশ্ন থেকে যায় গত ৬/৫/২০২০ ইং তারিখে নিহত হলো শামীম, এজাহার অনুসারে আসামি হলেন ২২ জন, তাহলে কেন একটি মহল্লার ৬০ টি পরিবারের মানুষ এলাকাছাড়া?
এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাধীন জানান, আপনারা বিভিন্ন জায়গায় জেনে থাকবেন যে আমরা কখনো কোন মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করি নাই। তারা অপরাধ করেছে তাই নিজে থেকে ভয়-ভীতি তে এলাকা ছেড়েছে, এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ জানায় হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ৬ জন আসামি আটক হয়েছে। এবং হত্যা যেদিন হয়েছে সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা গ্রামটিতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যেন আইন-শৃংখলার কোন অবনতি না হয়।
উল্লেখ্য গত ৬/৫/২০২০ ইং তারিখে উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের হরিণ গাছি গ্রামে একটি রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে ওই গ্রামের মেহের বক্সের ছেলে শামীম নিহত হয়। ঘটনার দিন রাতে নিহত শামীমের বাবা মেহের বক্স বাদী হয়ে রিফাইতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামিরুল ইসলাম বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।