করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে রোগীদের জন্য আইসিইউ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার মধ্যে সরকার গত মঙ্গলবার একনেক সভায় প্রায় তিনশত কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এ টাকায় জেলা পর্যায়ে হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট স্থাপন করা হবে।
এ খাত থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চারটি বেড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকারের সঙ্গে কথা বললে, সপ্তাহখানেক আগেই একটি চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চারটি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) বেড দেওয়া হবে। তিনি বলেন, এই ইউনিটের জন্য কুষ্টিয়া হাসপাতাল ইতোমধ্যেই প্রস্তুুতি শুরু করেছে।
ইউনিট প্রতিষ্ঠার জন্য বিশেষায়িত কক্ষ এবং অবকাঠামোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশ আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কত দিনের মধ্যে এ ইউনিটের কাজ শুরু হবে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময়ের ব্যাপারটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশমত প্রস্তুুতি চলছে, এটা অনেক ব্যয়বহুল একটি ইউনিট, জেলা পর্যায়ে এই প্রথম আসছে।
এই ইউনিট পরিচালনার লোকবল কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আছে কি না এবং আইসিইউ ইউনিটের যন্ত্রপাতি চালানোর টেকনিক্যাল কর্মিরা আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট করে না থাকলেও তা চালানো যাবে। হাসপাতালে কর্মরত অন্য কর্মি ও ডাক্তাররা তা চালাতে পারবেন বলে জানান।
একনেক বৈঠক থেকে জানা গেছে, রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়াতে সারা দেশে ১৭টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জনবল নিয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে এই প্রকল্পের আওতায়। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের তিন হাজার ৫০০ জন কর্মীকে আধুনিক দক্ষতা এবং জ্ঞানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
সেই সঙ্গে পিসিআর মেশিন, পিসিআর ল্যাব, আইসিইউ, পিপিই ও মাস্ক কেনার কাজে এই প্রকল্পের অর্থ ব্যয় করা হবে।বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যান্ডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ প্রকল্পটির আওতায় কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত ও পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। জেলা হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সুযোগ বাড়ানোও এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, ক্রিটিক্যাল কেয়ারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স ছাড়াও প্রত্যেক প্যারামেডিক্যাল স্টাফকেও বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এরা রোগীর ওপর সর্বক্ষণ নজর রাখেন। দরকার হলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে সামাল দেন। অনবরত হৃৎপিণ্ডের গতিবিধি, শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ, শ্বাস-প্রশ্বাসের অবস্থা, সবকিছু অনবরত পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি কোনও রকম সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে সব রকমের সাপোর্ট দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
সঙ্কটাপন্ন রোগীদের বিপদমুক্ত করতে বিশেষ ব্যবস্থাযুক্ত ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের নানান ভাগ আছে। সবে জন্মানো বাচ্চাদের অল্প ওজন থেকে শুরু করে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে জন্মানোসহ নানান শারীরিক ত্রুটি, শ্বাসকষ্ট, জন্ডিসসহ নানা সঙ্কটজনক পরিস্থিতি সামলে দেয়া যায়।