প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম মনি : আমরা ১৯৭৫ সালের ১৫আগষ্ট কালো রাতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়েছি। নারকীয় এই হত্যাকান্ডের পরেই বাংলাদেশের বুকে নেমে আসে ঘোর অমানিশা। তারপর আমাদের স্বাধীনতাকে ব্যার্থ করতে পাকিস্তানের মদদপূষ্ট জামাত-বিএনপি চক্রের ষড়যন্ত্র চলতেই থাকে। শুরু হয় ইতিহাস বিকৃতির পায়তারা।
বাংলাদেশের বুক থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম,স্মৃতি, তাঁর হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। এবং এখনো তা অব্যাহত আছে। ফলে অনিরাপদ হয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
এই আধার কাটাতে ১৯৮১ সালের ১৭ মে মৃত্যূভয় উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসেন। হাল ধরেন বাংলাদেশের। নেতাকর্মীরা ফিরে পান উদ্যম।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সততা, সাহস, ত্যাগ, দেশপ্রেম, মায়ামমতা, বিচক্ষণতা, মানবিকতা, সফল নের্তৃত্ব, দৃঢ়তা, পরিশ্রম, ন্যায়নিষ্ঠতা, নির্লোভ, সহজসরল জীবনযাপন তরূণ প্রজন্মের জন্য অনুকরনীয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক,সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমাদৃত। কোনো বাধা তাকে দমাতে পারেনি। ২৪ বার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে আছেন।
মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে আপোসহীন। তাঁর দক্ষতা,নৈপূণ্যের বদলে তিনি বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হিসেবে স্ব-মহিমায় ভাস্বর হয়েছেন।
এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন জননেত্রী শেখ হাসিনার। সাফল্য গাঁথা এই কর্মময় জীবন কুসমাস্তীর্ণ ছিল না, ছিল কণ্টকাপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাকে কারানির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। বার বার তাঁর জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল।
সহজ সারল্যে ভরা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। মেধা-মনন, সততা, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য্য, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। পোশাকে-আশাকে, জীবন-যাত্রায় কোথাও কোন প্রকার বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার কোনো প্রকার ছাপ নেই। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ও ধার্মিক। নিয়মিত ফজরের নামাজ ও কোরান তেলওয়াতের মাধ্যমে তাঁর দিনের সূচনা ঘটে।
একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর অবদান আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
তিনি শান্তি, গণতন্ত্র, স্বাস্থ্য ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নয়ন এবং দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে সৌভ্রাতৃত্ব ও স¤প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভূষিত হয়েছেন অসংখ্য মর্যাদাপূর্ণ পদক, পুরস্কার আর স্বীকৃতিতে।
ইতোমধ্যে তিনি ৩৯টি আন্তর্জাতিক পদক পেয়েছেন।
তিনিই বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং বাঙালি জাতির সকল আশা-ভরসার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ’
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের সাহসী পদক্ষেপ, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া, রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদননিশ্চিত করে ১৬ কোটি হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।
সার্বিক বিবেচনায় নারী উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষার প্রসার ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আমাদের প্রাণের নেত্রী নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা উপযুক্ত বলে আমি মনে করি।
এদেশের আপামর মানুষ মনে করেন, শেখ হাসিনার এগিয়ে যাওয়া মানেই বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া।
তাই ভিশন-২০৪১, ডেল্টা প্লান-২১০০ বাস্তবায়ন তথা বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনিার হাত কে শক্তিশালী করতে হবে।
তাই তো সুরে সুরে শিল্পীরাও বলেন, ‘বাঙালি ধন্য ধন্য বেশ, শেখ হাসিনা এগোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।’
দেশের সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের কবিতার কয়েকটি লাইনে বলতে চাই, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্নবাহু তাঁর/শুভ শুভ জন্মদিন/দেশরত্ন শেখ হাসিনার/পঁচাত্তরের কলঙ্কিত সেই রাত্রির পর/নৌকা ডোবে নদীর জলে/সবাই বলে নৌকা তুলে ধর/কেইবা তোলে কে আসে আর/স্বপ্নবাহু তাঁর/বঙ্গবন্ধু কন্যার/শুভ শুভ জন্মদিন দেশরত্ন শেখ হাসিনার/ শেখ হাসিনা সব নদীতে/দুর্জয় গতিতে/টেনে তোলেন নৌকা আনেন উন্নয়ন জোয়ার/শুভ শুভ জন্মদিন দেশরত্ন শেখ হাসিনার।’
আজকের এই তাৎপর্যপূর্ণ দিনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানাই হৃদয় নিংড়ানো ভক্তি,শ্রদ্ধা,ভালবাসা। হে মানবতার মা, আপনার জন্মদিনে আমাদের পুষ্পিত শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।
হাজারটা জন্মদিন আসুক আপনার জীবনে।
লেখক: সভাপতি,শহীদ শেখ রাসেল স্মৃতি ফাউন্ডেসন।